খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আরেক মামলার কার্যক্রম বাতিল, অপর এক মামলায় সুবিধা পাবেন তারেক
প্রথম আলো
প্রকাশ: ২ দিন আগে
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগে করা একটি মামলার কার্যক্রম বাতিল ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।
মামলার কার্যক্রম বাতিল চেয়ে খালেদা জিয়ার করা এক আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার রুল চূড়ান্ত (অ্যাবসলিউট) ঘোষণা করে এ রায় দেন।
এ নিয়ে এক দিনের ব্যবধানে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে থাকা ১২টি মামলার কার্যক্রম উচ্চ আদালতে বাতিল হলো।
এদিকে বেসরকারি একুশে টিভির চেয়ারম্যান আবদুস সালামের বিরুদ্ধে করা এক মামলার কার্যক্রম বাতিল ঘোষণা করে আজ রায় দিয়েছেন হাইকোর্টের একই বেঞ্চ।
মামলাটির কার্যক্রম বাতিল চেয়ে আবদুস সালামের করা এক আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে এ রায় দেওয়া হয়। এই রায়ের সুবিধা বিএনপির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান পাবেন বলছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবী।
সুবিধা পাবেন তারেকসহ অন্যরা
রাষ্ট্রদ্রোহের ওই মামলায় বিএনপির তৎকালীন সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, আবদুস সালামসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ৩ আগস্ট অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। অপর দুজন হলেন একুশে টিভির তৎকালীন (২০১৫) সাংবাদিক কনক সারওয়ার ও মাহাথীর ফারুকী।
এরপর মামলাটির কার্যক্রম বাতিল চেয়ে ২০১৭ সালে হাইকোর্টে আবেদন করেন আবদুস সালাম। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে একই বছরের ৬ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুলসহ মামলার কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ দেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে মামলার কার্যক্রম বাতিল ঘোষণা করে আজ রায় দেওয়া হলো।
ঘোষিত রায়ে আদালত বলেন, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করার ক্ষেত্রে অনুমোদন নেওয়া হলেও কোনো ‘কমপ্লেইন’ মামলা করা হয়নি। এ ক্ষেত্রে মামলা দায়ের ও কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া আইনসম্মত নয়, যে কারণে মামলাটি বাতিলযোগ্য।
আদালতে আবদুস সালামের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী শাহদীন মালিক ও মো. তায়্যিব-উল-ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. জসিম সরকার।
একপর্যায়ে তারেক রহমানসহ অন্য আসামিদের বিষয়টি দৃষ্টি আকর্ষণ করে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাজাহান ও আইনজীবী কায়সার কামাল বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে রায়ে আদালত বলেছেন, উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই মামলায় অভিযুক্ত অন্যরা এই রায়ের সুবিধা পাবেন।
রায়ের পর বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক আইনজীবী কায়সার কামাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আইনগতভাবে এ মামলা (রাষ্ট্রদ্রোহ) চলতে পারে না।...ফ্যাসিস্ট রেজিমের (সরকার) বিরুদ্ধে তারেক রহমান লন্ডনে একটি বক্তব্য রেখেছিলেন। সেই বক্তব্য একুশে টিভিতে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। বক্তব্য দেওয়ার জন্য তাঁকে মামলার আসামি করা হয়। এই মামলা দুই পক্ষে শুনানি করে বাতিল করা হয়েছে। এ মামলার সহ–আসামি তারেক রহমান এই বেনিফিট (সুবিধা) পাচ্ছেন। কারণ, মামলাই চলতে পারে না।’
২০১৫ সালের ৮ জানুয়ারিতে তারেক রহমান ও আবদুস সালামের বিরুদ্ধে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হয়। তেজগাঁও থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) বোরহান উদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
খালেদা জিয়ার এক মামলা বাতিল
নাশকতার অভিযোগে ২০১৫ সালের ৩ মার্চ রাজধানীর দারুস সালাম থানায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে একটি মামলা করে পুলিশ। অভিযোগপত্র দাখিলের পর মামলাটির কার্যক্রম বাতিল চেয়ে ২০১৭ সালে হাইকোর্টে আবেদন করেন খালেদা জিয়া। আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৭ সালের ১৬ মে হাইকোর্ট রুল দিয়ে মামলাটির কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ দেন। এই রুলের ওপর শুনানি শেষে আজ রায় দেন হাইকোর্টের একই বেঞ্চ।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও আইনজীবী কায়সার কামাল। এ সময় খালেদা জিয়ার পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, আইনজীবী জাকির হোসেন ভূঁইয়া, মাকসুদ উল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. জসিম সরকার।
এর আগে গতকাল বুধবার খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের ১টি, নাশকতার অভিযোগে ১০টিসহ ১১টি মামলার কার্যক্রম বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট।